প্রিয় ডায়েরী,
আমার বাসার জানালা দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি। নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা। আকাশের যে এতো সৌন্দর্য তা বোধকরি এই দূর পরবাসে এসে বুঝেছি। কেন যেন ব্রিসবেনের আকাশটা আমার দেখা অন্য আকাশ থেকেও বড়, স্বচ্ছ আর মায়াময়।
প্রথম আকাশ দেখে মোহবিষ্ট হয়েছিলাম ক্যাম্পিং এ গিয়ে। এন্ড্রু ড্রাইনান পার্ক, জায়গাটা ছিলো লোকালয় থেকে অনেক অনেক দূরে। গহীন জঙ্গল আর পাহাড় দিয়ে ঘেরা ছিলো আমাদের ক্যাম্প। ওখানেই প্রথম চিরচেনা আকাশকে মোহনীয় রুপে আবিস্কার করি।
ব্রিসবেন বেশ ফাকা ফাকা একটা শহর। শহরের ঠিক মাঝে অনেক বড় বড় যেগুলো কে বলে কিনা হাই রাইজিং বিল্ডিং, সেগুলো আছে। তবে সেগুলোও পরিকল্পনা করে দূরে দূরে অবস্থিত। তাই চোখের আড়ালে যায় না কখনো আকাশ। এই তো গতকাল একটা রঙধনু উঠেছিলো। এত বড় রঙধনু আমি আমার জীবনেও দেখিনি…! এ যেন সেই ছোটবেলার রংপেন্সিলে আকা ইচ্ছেমত রঙধনু। ব্রিসবেনের আকাশ এতটাই বড় যে দৃষ্টিসীমানায় পুরোটুকুই ধরা পরে।
প্রিয় ডায়েরী,
খুব ভালোলাগার সাথে বোধহয় একটা দুঃখবোধ জড়িয়ে থাকে। জানি না সবার থাকে কিনা। হয়ত থাকে, হয়ত না।
—————–আমার অনেক কথা বলার আছে। এই না বলা কথা গুলো জমা হয়ে পাহাড় হয়ে গেছে। এই কথা গুলো আমি অবশ্য লিখে রাখি। লিখে রাখি এক অদৃশ্য ডায়েরীতে। ছেলেবেলা থেকেই কাজটা করতাম। এরপর সেখান না লিখে তোমার কাছে লিখতে শুরু করলাম। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আমার সব চেয়ে প্রিয় জিনিসটা ছিলে তুমি। এমনো দিন গিয়েছে যে ১০-১২ বার তোমার গায়ে ডেট লিখেছি। এগুলোই ছিলো বোধহয় রিয়েল অর্থবোধক ডেটিং হা হা হা।
⇒
আমার এই অদৃশ্য ডায়েরি গুলোর মলাট খুলে মাঝে মাঝে পাতা উলটে যায় কেউ একজন, হয়তো সে আমি, হয়ত বা তুমি। না পড়তে চেয়েও অবচেতনভাবেই পড়তে থাকি সে গুলো। আনন্দে কিংবা খুব দুঃখের সময়গুলো দেখেও চোখ ছলছল করে উঠে। স্মৃতিকাতরতা, একেই বোধহয় বলে।
খুব টানটান সময় পার করছি। কিছু কিছু জিনিস তোমায় বলছি না, বলছি সেই অদৃশ্য ডায়েরীকে। তাকে আমি বলে যাচ্ছি অনবরত…!
বিকাল ৪ঃ৪০, ব্রিসবেন।
Leave a Reply