>> মুখবন্ধঃ পোস্টটা দিতে একটু কুন্ঠিত বোধকরছি কেননা দেখতে পাচ্ছি এই ভিডিওটির সোর্স রাজনৈতিক। তবে সরাসরি রাজনীতিকে না এনে দেশে ধর্মের চর্চার দুর্বল দিকটা এখানে দেখা যাবে বিধায় দিচ্ছি।
এক.
দেশের বাইরে এসে ফেসবুক খানা একটু বেশি সময় ধরেই খুলে রাখি দেশ আর রেখে আসা মানুষদের দেখব বলে কিন্তু কয়েকদিন ধরে “ইসলাম” কে ঘিরে নতুন নতুন পোস্ট, কিংবা বিষাদগার বলা যেতে পারে, তা সহ রুবেল-হ্যাপীর কান্ডকারখানায় ফেসবুক সয়লাব। আর এগুলো দেখে খুবই বিব্রতবোধ করছি। তাই একটু বোঝার চেস্টা করেছি বিষয় গুলো।
দুই.
এই ভিডিওটা (নিচের প্রথম ভিডিও টা) একজন স্কলার মানুষের ওয়াল থেকে নেওয়া, যিনি প্রভাবিত হয়ে তার ওয়ালে এটা শেয়ার দিয়েছে। তাই এটার Flip Side টা দেখানো জরুরী হয়ে পড়েছে কেননা এটার শেয়ার আর লাইক সহ কমেন্ট কিন্তু কম নয়। আমার মনে হয়, যারা এটা প্রাথমিক ভাবে পছন্দ করেছে এটার জচ্চুরীটা যখন তাদের চোখে পড়বে সবাই তখন তারা এটা ঘৃনা করা শুরু করবে। আর জচ্চুরীটা একদিন না একদিন ধরা পড়বেই আর এই ঘৃনাটা ধীরে ধীরে ব্যাক্তি পর্যায় (যিনি ভিডিওটি তৈরি করেছে) থেকে দুর্ভাগ্যজনকভাবে ইন্সটিটিউশন পর্যায়ে বা ইসলামের উপরই বর্তাবে। এই ভিডিও টিতে দেখানো হয়েছে একটা মেয়ে সুন্দর সুন্দর কথা বলছে, বলা শেষে তার মেসেজটা দিয়েছি। এই ভিডিওটির মুল মেসেজ হচ্ছে ভিডিওটা “শেয়ার” দেওয়া। অধিক শেয়ার পাওয়া বা লাইক পাওয়া ফেসবুক দুনিয়ায় একটা “বিকাম সেলিব্রেটি ম্যানিয়া” বা “স্টার হয়ে যাই” ম্যানিয়া। যে এই ভিডিওটি দেখবে আর শেয়ার দেবে তার জন্য এখানে দোয়া করা হয়েছে। দেশে ভন্ড পীর ফকির বা ভিক্ষুক ব্যবসায়ীরা যেটা করে থাকে। দু-চরন ধর্মের ভালো কথা শুনিয়ে হাত-পাতে কিংবা নিচের প্রতি মোহের সৃষ্টি করার চেস্টা করে, এটা তা ব্যতিত কিছুই না। কেননা, এই ভিডিওটিতে যেই বোরকা পড়া মেয়েকে দেখানো হয়েছে সে আসলে এই কথা গুলো বলে নি। সে বলেছে অন্য কথা (নিচের কমেন্টে এটার আসল ভিডিওটি পাবেন)। এই ভিডিওটিতে ইউএস এ কে ঘিরে পাকিস্তানের রাজনীতিক সমস্যা নিয়ে কথা বলা হয়েছে। অথচ এই পোস্ট যে তৈরি করেছে সে সুন্দর সুন্দর কথা বলে ইসলামের নামে নিজের ফয়দা হাসিল করতে ইচ্ছা মত বক্তব্য জুড়ে দিয়েছে। আপনি হয়ত বলতে পারেন, ভালো কথাই তো বলেছে, কিন্তু না, এই ভালো কথার অন্তরাল আপনাকে বুঝতে হবে। যখন আপনি অন্তরালটা ধরতে পারবেন তখনই আপনি বিগড়ে যাবেন ভাববেন এই হচ্ছে ইসলাম, ইসলামের শিক্ষা…। দুর্ভাগ্যজনক।
তিন.
এদিকে রুবেল-হ্যাপি নিউজেও কিন্তু আমাদের ধর্মের প্রাকটিস দেখা যায়। কয়েকদিন ধরে এত এত পোস্ট যেতে দেখে, এত কি ঘটেছে তা বোঝার জন্য একটা ভিডিও ও একটি অডিও দেখলাম যেখানে হ্যাপী নামের মেয়েটা বলছে, ‘ফজরের আজান হচ্ছিলো তখন ও সে রুবেলের বুকে মাথা রেখে রুবেলকে বিয়ের কথা বলেছে আর রুবেল বলেছে হ্যা, সে তাকে বিয়ে করবে। ব্লা ব্লা ‘- এটা শুনে তো আমার টাসকি খাওয়ার জোগাড়।
মজার ব্যাপারটা হচ্ছে এই ক্লাইমেক্সেও ধর্মের অবস্থান আমরা করে নিয়েছি নিজেদের মত করে। এই মেয়েটা ছেলেটাকে চেপে ধরেছে যে তুমি ফজরের নামাজ যখন হচ্ছিলো তখন বলেছিলে আমাকে বিয়ে করবে। কিন্তু এখন করছো না, কি (ধর্মীয়) অন্যায়। মেয়েটা এখন এটা বলে তার ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত করতে চাচ্ছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, তার খেয়াল নেই যে সে ফজরের আজানের সময় যার সাথে তার বিবাহ হয় নি বা ধর্মীয় মতে বিবাহ হয় নি বরং ধর্মীয় ধারায় প্রথম শ্রেনীর ভয়াবহ অন্যায়ে লিপ্ত থাকা অবস্থায় একটা ছেলের বুকে মাথা লুকিয়ে (সরি, এভাবেই করেছিলো সে বলেছিলো তাই লিখছি don’t take it otherwise) ধর্মীয় ভাব খুজছিলো যা পরবর্তীতে সে কোট করে বিষয়টার সাথে ধর্মকে যুক্ত করেছে।
এই হচ্ছে আমাদের ধর্মের ব্যবহার আজ কাল। হাহ্
বোধকরি পৃথিবীর অন্যন্য জায়গাতেও যেখানে ইসলাম ঘিরে অন্যায় বা সমালোচনা হচ্ছে তা এগুলোর ই রিপিটেশন। আসলে আমাদের যাদৃচ্ছিক আর স্বার্থহাসিলের জন্য ধর্মের ব্যবহার ধর্মকে আজ এমন জায়গায় দাড় করিয়েছে যে আমরা “মুসলিম” হিসাবে একটা সংকট তৈরি করতে চলেছি। আমার কেন যেনো মনে হয় না বুঝে কোরান পড়া বা মুখস্ত করা থেকেই এর সুত্রপাত।
তবে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না। কেননা বিভ্রান্ত হলেই হারিয়ে যেতে হবে অতলে…!
বিভ্রান্তকর ভিডিওঃ
মুল ভিডিও টা:
Leave a Reply