এক.
আজ শুক্রবার। জুন মাসের ১৩ তারিখ। ১৩ তারিখটা শোনার পর কেনই যেনো এটা থার্টিনে কনভার্ট হয়ে যায়, সাথে আবার যুক্ত হয় একটা Prefix-Unlucky, বিষয়টা বেশ প্রচলিত। আনলাকি থার্টিন। অদ্ভুদ…এই বিষয়গুলো। খোড়া যুক্তি দিয়ে সাজানো। এই যেমন মঙ্গলবার। বারের নামটাই মঙ্গল, অথচ সবাই এই দিনে আশংকায় থাকে, অমঙ্গল। দিনটা মঙ্গলের প্রতিক না হয়ে হয়েছে অমঙ্গলের প্রতিক…! আজব। কেনো এমন হয়েছে, হয়েছে নিশ্চয়ই কোন Long Rendered Tradition থেকে। এর পিছনে নিশ্চয়ই কিছু আছে, হতে পারে সেটা কোন যুক্তি অথবা কোন ঘটনা…! যুক্তি হলে যেটা হবে কোন Twisted Logic যার কোন ভিত্তি থাকবে না। তবে যদি কোন ঘটনা থাকে তাহলে তা নিশ্চয়ই হবে রোমহর্ষক ।।
আম্মা গতরাতে ফোন দিয়ে বললো, আজ অনেক ভালো একটা দিন…(লাইলাতুল বরাত)! কিন্তু যখন শুনলো আমি কুমিল্লাতেই থাকব, মন খারাপ করলো। কতটুকু মন খারাপ করেছে তা বুঝতে পারছি। কিছু কিছু ব্যাপার আছে বোঝা যায়, ছোয়া যায় না, দেখা যায় না আবার কখনো কখনো যুক্তি দিয়েও আবদ্ধ করা যায় না। এই বিষয়গুলো স্পিরিচুয়াল, কেউ কেউ বলে সুপারন্যাচারাল তবে বিষয়গুলো নিঃসন্দেহে রোমহর্ষক…! Unlucky 13 কিংবা মঙ্গলবার হয়তো এমনই যুক্তির বাইরের বিষয় থেকে সৃষ্ট। হয়ত…!
দুই.
প্রতিবছর জুনের এই ১৩ তারিখে কিছু বিষয় ঘটে মজার। এই ঘটনার গুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে ফোন। দেখা যায়, আমার বন্ধু যার সাথে অনেকদিন কথা হয় না, অকারনেই আজ ফোন দিয়ে বসে। হয়তো কোন কাজে, নয়তো এমনিতেই। তবে এমন একটা ফোন আমি পাই-ই পাই। সেই ফোনটা খুবই স্বাভাবিক হয় এবং সে আমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা না জানিয়েই ফোনটা সে কেটে দেয়। এর অর্থ, সে শুভেচ্ছা জানাতে ফোনটা দেয়নি। দিয়েছে, যা একটা Coincidence. এমনই একটা ঘটনা ঘটার পর আজ বসে বসে চিন্তা করছিলাম, কেনো এমনটা ঘটে? বিষয়টা আসলে সাদামাটা, আর অন্যসব দিন গুলোর মতই। তবে এই ১৩ তারিখের প্রতিটি মুহুর্তকে আমি বিশেষভাবে দেখি বলেই ঘটনাগুলো বিশেষত্ব পায়।
তারপরো সবকিছুই গড়পরতার কি? নয় তো। প্রতিটি দিনেই নতুন কিছু হচ্ছে যার অনেকগুলো একটা দিনকে রাঙ্গিয়ে দিতে যথেস্ট। আজ আমার জন্য সারপ্রাইজ ছিলো একটা টেক্সট্। আমার কাছে প্রথম পাঠানো মালিয়াতের টেক্সট্। ওর বয়স কতো? ৫ কি ৬ হবে। ৬ হবে না। কিন্তু ও ঠিকই আমাকে অবাক করে দিয়ে আমাকে বার্থডে উইশ করেছে টেক্সট্ পাঠিয়ে। প্রতিবার সে ফোন করে কিন্তু এবার করেছে টেক্সট। আমি জানি না, ও এর আগে আর কোথাও মোবাইলের মাধ্যমে টেক্সট্ পাঠিয়েছে কিনা…! তবে আমার কাছে প্রথম, শুধু প্রথম না চমকে দিয়ে প্রথম। এত মজা পেয়েছি যে ওর সাথে রীতিমত টেক্সটিং করা শুরু করে দিয়েছিলাম। থ্যাঙ্কু মা-মনি। এতটুকু টেক্সট্ পাঠিয়ে আমাকে প্রভুত আনন্দ দিয়েছো। এই সকল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আনন্দের যোগফল কিন্তু একটা বৃহৎ সংখ্যা। আর সেই সংখ্যাটি অসীমের কাছাকাছি।।
তিন.
মালিয়াত আর মাহভিন। এই দুই বোনের মধ্যে কনট্রাস্ট বেশ Remarkable. এটলিস্ট আমার দৃষ্টিতে বেশ ধরা পরে। এই যেমন, খুব ছোট সময় থেকেই মালিয়াতকে সব কিছু করে দিতে হয়, তাকে খাবার খায়িয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে সব কিছুই করে দিতে হয়। ছোট্র মাহভিনটা হয়েছে ঠিক তার উল্টো। সে নিজের সব কাজ নিজে নিজেই করবে। জিদ্দি, অন্য কাউকেই করতে দিবে না, বলে- আমি সব পারি। ঠিক মত হাটা শেখেনি, তখন একদিন দেখি সে নিজের কাপড় নিজেই ওয়াশ করছে…! দুটো সাইকেল দুই জনের জন্য কিনে নিয়ে গেলাম। মালিয়াত সাইকেলকে বশে আনতে স্বাভাবিকভাবেই বেশ কসরতে মগ্ন, ওদিকে দেখি মাহভিন সাইকেলে বসেই চালানো শুরু করে দিয়েছে, যেনো সে এই যন্তরটা চালাতে আগে থেকেই অভ্যস্ত…! শুধু চালাতে চালাতে ঘরের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে চলে যাবার পর সাইকেলটা ঘুরিয়ে দেওয়ার কথা বোঝাতে চিৎকার করে বলছে- ঠিক করে দাও, ঠিক করে দাও।। আমার এই ভাগ্নি দুটোই তাদের মত করে মায়াবতী। নিজেস্বতায় অন্যন্য।
চার.
একই হাতের পাচটি আঙ্গুল যেমন এক হয় না, আপন ভাই বোন গুলোও যে সবাই একই রকম হবে বিষয়টা তা নয়। তবে কাছাকাছি হওয়াটাই স্বাভাবিক। Appearance এক না হলেও স্বভাব কিছুটা এক হওয়াটাই বাঞ্চনীয়। যদি না হয়, তাহলে তার কারনটা কি হতে পারে? পরিবেশ…! দুজনের বেড়ে উঠার পরিবেশ এক নয়/ছিলো না। তাই কি?
মালিয়াতের টেকস্ট পাবার পর থেকেই আমি আমার কথা ভাবছি। আমরা তিন ভাই বোন। আমার ভাইয়া আর আপুর ভেতর বেশ সামঞ্জস্য, Appearance থেকে শুরু করে Gesture-Posture, Behavior কিন্তু আমি একটু তফাতে…! 🙁 বেশ খানিকটা Worst, সব দিক থেকেই। কারনটা কি? রিসার্সের টপিক পাওয়া গেলো 🙂 I hope, in this new of MY OWN YEAR I will figure out the inherent secrete of this chaos..!
পাচ.
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট থাকাকালীন মনে প্রানে চাইতাম হলে একটা সিংগেল রুমে থাকতে। আমার হলে সিংগেল রুম ফ্যাসিলিটি ছিলো না তাই একা থাকার আকুতিতে মনটা বিষিয়ে থাকতো। যতগুলো রুমমেট পেয়েছিলাম সবাই বিষয়টা জানতো, একা থাকতে আমি পছন্দ করি, তাই আমার পরীক্ষা আসলে ওরা আমাকে একা থাকার ব্যবস্থা করে দিতো। গত কয়েকটি বছর ধরে আমি আমার সেই পিপাসা মেটাচ্ছি। আর বিগত কয়েকটি মাসে বিষয়টা অন্যন্যতার পর্যায়ে পৌছেছে। 🙂 আজ যেমন। ১৩ তারিখটা সম্পুর্ন নিজের জন্য। অবস্থানগত আকাঙ্ক্ষা মিটলেও আমার Year Resolution – টা পরিবর্তন করতে পারলাম না। বিগত কয়েকবছরে চলে আসা Resolution টা Reiterate করতে হচ্ছে। বিগত বছরের সংকল্প/পরিকল্পনা ছিলো,
“Well defined, in order to be a perfect man; পরিপুর্ন মানুষ হবার অভিপ্রায়ে, নিজেকে সংজ্ঞায়িত করা।। ”
বুঝতে পারছি, চলতে হবে অনেকটা পথ, তাই এবছরেও To be continued……!
প্রার্থনাঃ
“হে প্রভু, হে আল্লাহ, দৃষ্টির অন্তরালবর্তী ও দৃষ্টিগ্রাহ্য সকল বিষয়ে যেন তোমাকে ভয় করতে পারি, হে প্রভু যদি জীবন আমার জন্য কল্যানকর হয়, তাহলে আমাকে জীবিত রাখ, আর যদি মৃত্যু আমার জন্য কল্যানকর হয় তাহলে আমাকে মৃত্যু দান করো, সেই অনুগ্রহ প্রার্থনা করি। আমি তোমার নিকট প্রার্থনা করি সত্য কথা বলার সাহস, খুশি ও ক্রোধ উভয় অবস্থাতেই। আমি তোমার নিকট প্রার্থনা করি মিতব্যয়িতার, সচ্ছল-অসচ্ছল উভয়াবস্থাতেই। প্রার্থনা করি এমন নেয়ামত যা শেষ হবার নয়। প্রার্থনা করি যা চক্ষু জুড়াবে অনিঃশেষভাবে। আমি তোমার নিকট চাই ভাগ্যের প্রতি সন্তুষ্টি। আমি তোমার নিকট চাই মৃত্যুর পর সুঃখময় জীবন। আমি তোমার নিকট প্রার্থনা করি তোমাকে দেখার তৃপ্তি, আমি কামনা করি তোমার সাথে দেখা লাভের আকুলতা-ব্যাকুলতা যা লাভ করলে আমাকে স্পর্শ করবে না কোন অনিষ্ট, আর আমাকে স্পর্শ করবে না এমন কিছু যা আমাকে পথভ্রষ্ট করতে পারে। হে প্রভু, তুমি আমাদের কে বিশ্বাস দ্বারা ভুষিত করো আর আমাদের কে বানাও পথ প্রদর্শক ও হেদায়েতের পথিক।” আমিন।