কাছাকাছি বেশ কিছু শব্দ আছে, Communalism → Sectarianism→Factionalism এগুলো নেতিবাচক শব্দ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমার ধারনা এই শব্দ গুলো বা যেটা বলতে সাম্প্রদায়িকতা বোঝায় তা মানব সাম্প্রদায় টিকে থাকার তাগিদেই তৈরি করেছিলো। দলবদ্ধভাবে বসবাস। আর অবশ্যই সেই দল কিছু প্যারামিটারের উপর ভিত্তি করে হতো, হয়তবা সেই প্যারামিটার গুলো ছিলো গায়ের বর্ন, ছিলো ধর্ম, জাতি, মনন।

মানুষ যেমন একতা বদ্ধ হয়েছে সাম্প্রদায়ীকতার সুত্র ধরে তেমনি উগ্রবাদীতার কারনে বন্ধন ভেঙ্গেছে।
তবে প্রতিটি মানুষ বিভিন্ন ধারায় একে অপরের সাথে যুক্ত। মানুষ যদি তার প্রতিটি ধারাকে ধারন করে তাহলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি হওয়া সম্ভব। আমার একটা ছোট ভাই আছে, রাজিব তার নাম। একসময় ওর সাথে অনেকটা সময় কেটেছে আমার। একদিন এই ভাইটার সাথে সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে কিছু কথা চালাচালি হয়েছিলো আমার ফেসবুকে। তাকে বোঝানোর চেস্টা করেছিলাম, ‘ইসলাম’ এটা একটা প্লাটফর্ম। এই প্লাটফর্মে সবাই এসে দাড়াতে পারে, সেক্রিফাইসের মাধ্যমে কমন ইন্টারেস্ট এ একাত্বতা করতে পারে। তাই Being a platform, I would uphold Islam. রাজীব খুবই রুঢ ভাবে আমাকে সাম্প্রদায়ীক বলেছিলো। ছোটভাইটা আমার, এরপর থেকেই বড় একটা গ্যাপ তৈরি হলো।
হা হা হা, মতামতের মিল না হলে সবাই দুরে চলে যায়, তবে কতটাই বা দুরে যাবে, কোন না কোন প্লাটফর্মে তো মতের আবার মিল হবে। যদি সদিচ্ছা থাকে, তাহলেই সহাবস্থান সম্ভব।

মিম নামে একটা ডাক্তারের সাথে একজন মহিলা এমপি-র বড়সড় কলিশন হয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল এ। বিষয়টা নিয়ে ফেসবুকে সবাই সোচ্চার। এর ভিতরে আমি ইমরান সরকারের একটা ফেসবুক স্টাটাসের নিচে বদরউদ্দিন ওমর নামে একজন ডাক্তারকে দেখতে পেলাম, তিনি লাইক দিয়েছেন লেখাটায়। বদরউদ্দিন ওমর ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজের প্রফেসর ছিলেন। ফরিদপুর থেকে ঢাকায় আসার সময় একদিন তার সাথে পরিচয় হয়। কথা বলতে বলতে জানতে পেরেছিলাম তিনি দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। তিনি যেতে চান না, তাও যেতে হচ্ছে তাকে। কেননা তিনি পাকিস্তান থেকে MBBS করেছেন আর তাই তিনি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছেন। তার কথায় তীব্র হতাশা আর ক্রোধ ছিলো। তার সাথে আমার ফেসবুকে কানেকশন আছে।  তাই জানতে পারি এই লোকটি সত্যি দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন, মালয়শিয়ায় একটা প্রাইভেট মেডিক্যলে সিনিয়র লেকচারার (এখানে তিনি এসোসিয়েট ছিলেন) হিসাবে আছেন। মালয়শিয়া হচ্ছে এমন একটা দেশ যেখানে সিটিজেনশিপ পাওয়া যায় না। তার মানে সে যথেস্ট আনসার্টাইন একটা সিস্টেমে আছেন, প্রায় অনিশ্চিত একটা জীবন। তারপরেও তিনি চলে গিয়েছেন।

কিন্তু সেই লোক ইমরানের ফেসবুকের স্টাটাসে লাইক দিয়েছে। কেনো? প্রফেশনাল কমিউনালিজম। এটা হচ্ছে তেমনই একটা প্লাটফর্ম যেটা দিয়ে তারা কাছাকাছি এসেছে। …সম্ভব কি নয়, সহবস্থান?

Communalism

Communalism

 

 

আমি ডিপার্টমেন্টের চার্জে গিয়ে কিছু এক্সপিরিমেন্ট করেছিলাম। আমার ডিপার্টমেন্টে শিক্ষক-ছাত্র কেউই একটা প্লাটফর্মে ছিলো না। কোন প্রোগ্রামেই সবাই এক সাথে হতো না। এক গ্রুপ আসতো তো আরেক গ্রুপ আসতো না। ধীরে ধীরে আমি আমার শেষ প্রগ্রামটায় সবাইকে এক প্লাটফর্মে নিয়ে এসেছিলাম। আমাকে আমার সহকর্মীরা এ সি র মিটিং এ চ্যলেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলো, আমি পারবো না। সেই প্রগ্রামে আমি শুধু একজন শিক্ষককে পাই নি, আর সবাই এসেছিলো।
কিন্তু এক না হওয়ার যে স্রোত তা ও কিন্তু ফুলে ফুসে উঠেছিলো। আমার চলে আসার সময় আমার অবর্তমানের সুযোগে তা ঝাপিয়ে পড়েছিলো। শুনতে পাই, এখন সেই ঝড়ে বেশ এলোমেলো পরিবেশ। তবে এই এলোমেলো পরিবেশের কারনে কিন্তু একটা অংশ লাভবান হয়, হচ্ছে। আর সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষের শেকড় সেখানেই।

 

 

 

 

 

FB তে মন্তব্য করতে এখানে লিখুন (ব্লগে করতে নিচে) :

2 Responses to ইসম্‌ (ism)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

May 2024
S M T W T F S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031