১১-১১-১৩/ডরম,কুবি
১.
বেশ কিছুদিন ধরে মনে হচ্ছিলো, ভুল করেছি। এখন মনে হচ্ছে এতটাই সে ভুল হয়েছে যার মাশুল আমাকে গুনতে হবে। কেনো মনে হচ্ছে? জানার জন্য Flash Back করতে হবে। কিন্তু আমার সাবকন্সাস মাইন্ড আমাকে পিছনের দিকে তাকাতে দিচ্ছে না। এক অদ্ভুদ ব্যাপার এটা। জীবনের খুব গুরুত্বপুর্ন সময়ের কিছু অংশ আমি নষ্ট করে ফেলেছি। বরই বুরবাক এই আমি। যাই হোক, এই মিক্সড ফিলিংসের ভিতরও জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাবার কিছু উপকরন আছে…!
২.
খুব ছোট সময় আম্মুর ন্যওটা ছিলাম। সবাই বলে, আম্মা, আম্মা বলে শুধুই আম্মুর পিছু পিছু ঘুরতাম। লজ্জার বিষয়। যাইহোক, একবার আম্মাকে ছাড়াই নানু বাসায় বেড়াতে যাই। খুব সর্ট Tour. মনে আছে, নানু বাসায় তখন লাল চালের ভাত (Rice) রান্না হতো। এই ধরনের ভাত বাসায় রান্না হতো না তাই বেশ আগ্রহের সাথে সেটা খেতাম। কিন্তু খুব একটা খেতেও পারতাম না।
তো একদিন দুপুর বেলা খেতে বসেছি। হঠাৎ কি হলো, প্রচন্ড বিষম (Hiccough) খেলাম। তখন শুনি নানুর রাগতস্বর, বলছেন, ‘একদিনের জন্য আইছে, তার জন্য ও আবার পরান পুরতেছে।’ নানু মুলত আমার আম্মাকে উদ্দেশ্য করে একথা বলেছিলেন। আমি নানুকে বিষয়টা জিজ্ঞাসা করলাম আর যেটা জানতে পারলাম, দুরের কেউ যদি খুব করে কাউকে স্বরন করে আর সেই মুহুর্তে যদি সে কিছু খেতে থাকে তাহলে তার বিষম হয়…! ছোট্ট আমি এটা শুনে খুব অবাক হয়েছিলাম, হয়ত বিশ্বাস ও করেছিলাম তখন। তবে একটু বড় হয়ে ভেবে যেটা বুঝেছিলাম, এটা একটা সুপারস্টিশন বা সোজা বাংলায় কু-সংস্কার।
কোন এক অজ্ঞাত কারনে মানুষের মস্তিস্ক কিছু কিছু ঘটনা সংরক্ষন করে। তাকে কনশাস মাইন্ডে Store Order না করার পরও সে কিছু একটা store করে। এই স্মৃতিটা আমার তেমনই একটা মস্তিস্কের Autonomous Decision এর ফসল। এখনও চোখ বন্ধ করলে আমি চোখের সামনে সেইদিনের খাবারের সময়কার দৃশ্যটা দেখতে পাই, দেখতে পাই গামলায় ধোয়া ওড়া লাল ভাত…!
মানব জীবনের একটা অংশ রহস্যমন্ডিত। রহস্য একধরনের রোমাঞ্চের সৃস্টি করে। আর রোমাঞ্চ ছাড়া জীবন নামক নাতিদীর্ঘ জার্নি অনন্তকাল হতাশার যাত্রা তুল্য। নয় কি?
৩.
গতকাল সন্ধায় বাসার সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে কোন কারন ছাড়াই সুমনের কথা মনে হলো।
সুমন, পুরো নাম- আশিক-ই-সাদাতিয়া। জিউস নামটা তার খুবই পছন্দের। ও ওর Pseudo নাম হিসাবে ভার্সিটি লাইফে তাই এটা ইউজ করত। কোন সুমন? জিউস সুমন…! নামের সাথে মিল থাকায় ওর খাতায় প্রায়ই লেখা দেখতাম, Bob-e-Gill. এটা সম্ভবত সাউন্ড্ আশিক-ই-সাদাতিয়া। 🙂
সুমন আমার ‘টেক কেয়ার’। এই টেক Take নয়, TEC, Technology এর সর্ট ভার্সন। TEC CARE. টেকনোলজি রিলেটেড কোন বিষয় আটকে গেলে আমি ওকে ফোন দেই। ও মন দিয়ে শুনে তারপর ইনিয়ে বিনিয়ে হোক বা পেচিয়ে টেচিয়ে হোক, একটা সমাধান ও আমাকে ঠিকই বের করে দেয়। অনেক নতুন বিষয়ের কন্সেপ্ট আমি ওর কাছ থেকে পেয়েছি। যেহেতু সে আমার ‘টেক কেয়ার’ আমার ফোনের একটা হট লাইন (fnf) ওর সাথে করা। ব্যাটা কুরুবক এটা কোনভাবে টের পেয়েছে। তাই সে নিজে কখনো ফোন দেয় না। চুপ করে থাকে। : 👿
যাইহোক, সিড়িতে ওর কথা বিনা কারনে মনে পড়ার ক্ষনকালের মধ্যে ওর ফোন পেলাম। বড়ই অবাক হলাম। আচানক বিষয়ই বটে। 🙂
সুমন তার জীবনের খুব একটা ইম্পরটেন্ট সময় পার করছে। আমার TEC CARE এর লাইফে ‘সে’ যেন হয় প্রকৃতঅর্থেই TAKE CARE সেই শুভকামনা রইলো। নিরন্তর শুভকামনা তোদের জন্য। টেক কেয়ার এন্ড কেয়ার লাইন। 🙂
পুনশ্চঃ ১– প্রথম যখন মোবাইল ফোনের প্রচলন শুরু হয় বাংলাদেশে আর আমি যখন ইউজ করতে শুরু করি তখন আমি একটা এক্সপিরিমেন্ট করেছিলাম। এক্সপিরিমেন্টটা আমাকে অবাক করে দিয়েছিলো। আমি লক্ষ করেছিলাম, মন থেকে যদি আমি কাছের কাউকে স্বরন করি তাহলে কিছুক্ষনের মধ্যে তার ফোন বা মিস কল (তখন মিসকলের প্রচলন ছিলো) চলে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ছিলাম তখন, তাই এটা একটা থিওরি আকারে প্রকাশ করার ইচ্ছা ছিলো। :), প্রকাশ করতে পারি নি তবে তার একটা গালভরা নাম দিয়েছিলাম, RRF- Radiation of Relative Feelings.
পুনশ্চঃ ২-পুরাতন কিছু কৃষ্টি-কালচার কিংবা Long Rendered বিশ্বাস আছে যা বহু আগে থেকেই জেনারেশন থেকে জেনারেশনে চলে আসছে। যেমন আমার নানু যেটা আমাকে বলেছিল, আমার বিষম খাওয়ার কারন হিসাবে। আপাত দৃষ্টিতে এগুলোর হয়ত ভিত্তি নেই তবে কেনই বা এগুলো আমাদের পুর্বপুরুষদের প্রভাবিত করেছে এটা কিন্তু ভাববার বিষয়।
পুনশ্চঃ ৩-সম্প্রতি ব্রেইন রেডিয়েশন রীড করার মেশিন আবিস্ক্রিত হয়েছে। এই রেডিয়েশন রীডার দিয়ে দূর থেকেই বলে দেওয়া সম্ভব সে (মানুষ/সাবজেক্ট) এখন কি ভাবছে। তাহলে এই রেডিয়েশন হয়ত সত্যি কাছের মানুষ কে খুজে তাকে আলোড়িত করার ক্ষমতা রাখলেও রাখতে পারে। পারে না? পারে, কারন আমাদের জানার বাইরে আছে আরো অনেক বড় জগত, অনেক বড় প্রকৃতি। আর এ কথা বলার অপেক্ষা রাখেনা, প্রকৃতি রহস্য পছন্দ করে।